Translations and Summaries of Walt Whitman's poems (American Poetry)
- Walt Whitman (Born: 1819 and Died: 1892)
- Biography and Literary Works.
- Work in English Literature.
- Poem Translation.
- Poems Summary.
জীবনী ও সাহিত্যকর্ম:
জীবনী: ওয়াল্ট হুইটম্যান ১৮১৯ সালের ৩১ মে লং আইলান্ডের ওয়েস্ট হিল নামক স্থানের ছোটো একটি খামারবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ওয়াল্টার ও মা লুইসা ন ভেলসের মোটামুটি শিক্ষিত ছিলেন। জন সন্তান ছিল তাঁদের। এদের মধ্যে দু'জন ছিল মানসিক দিক থেকে অসুস্থ। হুইটম্যানের পিতা প্রথমে একটি খামার স্থাপন করেন। পরবর্তীতে ইমারত নির্মাণের কাজে সহায়তা করতেন শ্রমিকদের সাথে। হুইটম্যানের মা ছিলেন তাঁর সন্তানদের খুবই কাছাকাছি।
তিনি উদারনৈতিক ধর্মীয় সংগঠন ভ্রাতৃসদে দ্বারা অনুপ্রাণিত ছিলেন, যা পরবর্তীতে হুইটম্যানের মধ্যে প্রভাব ফেলে। হুইটম্যান তাঁর কবিতায়, ‘তোমাকে', 'তুমি' এসব শব্দ নানা ক্ষেত্রে ব্যবহার করেছেন, এসবই ভ্রাতৃসংঘের স্মৃতি, এমনকি তিনি তাঁর লেখায় যে নবম মাস কথাটি ব্যবহার করছেন সেটিও এই চেতনারই ফলশ্রুতি, এটি ভ্রাতৃসংঘের স্মৃতিকে স্মরণ করায়।
তাঁর ছেলেবেলায় লং আইল্যান্ডের ছোটো খামার আর প্রতিবেশী ব্রুকলিন শহর তাঁর কাছে অভিন্ন হৃদয় বন্ধুর মতো ছিল। দুটো স্থান বিশেষ করে এ দুটো জায়গার পরিবেশ, প্রকৃতি, মানুষজন যুবক হুইটম্যানের মধ্যে যথেষ্ট প্রভাব ফেলেছিল। তাঁর কবিতা “Threre was a child went Forth' আমাদের সামনে তাদের গার্হস্থ্যজীবন ব্যবস্থা, মা-বাবা ও পরিবার পরিজনদের ছবি স্পষ্ট করে তোলে। একজন সমালোচকের মতে, “এই টগবগে তরুণ কেমন যেন একটু অলস আর সর্বদা স্বপ্নের জগতে নিমগ্ন থাকে।”
মাত্র এগারো বছর বয়সে হুইটম্যান বিদ্যালয় পরিত্যাগ করে। নানাবিধ কর্মের সাথে নিজেকে জড়িয়ে ফেলেন। কখনো অফিস বেয়ারা, কখনোবা ছাপাখানার সহকারী বালক কিংবা গ্রাম্য পাঠশালার শিক্ষক, সত্যি কথা বলতে কি সে সময়ে হুইটম্যান বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করার উপযুক্ত ছিলেন না। এরপর সতেরো বছর বয়সে তিনি সাংবাদিকতার পেশা বেছে নেন। হুইটম্যান বিভিন্ন ধরনের পত্রপত্রিকায় কাজ করেন।
এ সময়েই তাঁর ‘leaves of Grass লিখিত হয়। সাতাশ বছর বয়সে তিনি ব্রুকলিন ডেইলি ঈগল' পত্রিকার সম্পাদক নিযুক্ত হন। কিন্তু এ কর্মে তিনি দু'বছরের বেশি টিকে থাকেননি। বিশেষ করে রাজনৈতিক কারণে সেখান থেকে তিনি সরে আসেন। মূলত তিনি ছিলেন গণতন্ত্রবাদী। পত্রিকায় কাজ করার সময় তিনি আমেরিকাকে আরো ব্যাপকভাবে পর্যবেক্ষণ করার সুযোগ পেলেন। সেসবই যেন তাঁর সঙ্গীতকে আরো প্রাণবন্ত করে তুলল।
মাঝেমধ্যেই হুইটম্যান উদ্দেশ্যহীনভাবে এখানে সেখানে যত্রতত্র ঘোরাফেরা করতেন, বিনা কারণেই খেয়া নৌকায় নদী পারাপার করতেন। তিনি তাঁর ভাই জেফের সাথে একবার ট্রেন জার্নি করেন বাল্টিমোর থেকে কাম্বারলেন অবধি। কোচে আরোহণ করে পার্বত্য এলাকা ঘুরে বেড়ালেন। ওহিওর নিম্ন অঞ্চলে নৌকা ভ্রমণ করলেন, মিসিসিপি থেকে বন্দর নগরী লুসিয়ানা পর্যন্ত। তিনি নায়াগ্রা জলপ্রপাতও পর্যবেক্ষণ করেন। স্রোতে নৌকা ভাসিয়ে তিনি নেমে আসেন শেষে ব্রুকলিন নদীতে।
হুইটম্যান আমেরিকার জীবনযাত্রা, এর নদ-নদী, প্রকৃতি, প্রেইরি অঞ্চল, মানুষের কর্মচাঞ্চল্য সবই অনুসন্ধানী দৃষ্টিতে প্রত্যক্ষ করেছেন। আমেরিকাকে তিনি মনে প্রাণে। ভালোবেসেছেন, আমেরিকাই ছিল তাঁর ধ্যানজ্ঞান। ১৮৪৮ সালে ব্রুকলিনে ফিরে এনে তিনি আবার সাংবাদিকতার কাজে নিজেকে নিয়োজিত করলেন। ১৮৫৫ সালের ৪ জুলাই তাঁর 'Leaves of Grass'-এর প্রথম সংস্করণ প্রকাশিত হলো। বইটি এক হাজার কপিও বিক্রি হলো না। এমনকি এ বিষয়ে তেমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ সমালোচনাও প্রকাশিত হলো না।
আরো নতুন কবিতা সংযোজন করে ১৮৫৬ সালে 'Leaves of Grass'-এর দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হলো। এটি দেখে এমার্সন পত্র লিখে জানিয়েছিলেন, “শুরুতেই তোমার অগ্রগতিকে শুভেচ্ছা জানাই।" এরপর আমেরিকায় গৃহযুদ্ধ শুরু হলে, হুইটম্যান প্রত্যক্ষ করলেন এই বীভৎসতা, তাঁর স্বপ্নের আমেরিকা যেন আহতদের চিৎকার আর মৃতজনদের পরিবারের হাহাকারে ভরে গেল। এ ঘটনা তাঁর চিন্তাজগতে ব্যাপক ছাপ ফেলে যায়। এরই মাঝে আততায়ীর হাতে নিহত হলেন আব্রাহাম লিংকন, নিপীড়িত জনদের এই মহান নেতার মৃত্যুতে গভীর শোক পেলেন হুইটম্যান, যার ফলশ্রুতিতে তিনি লিখলেন তাঁর সেই বিখ্যাত কবিতা 'ও ক্যাপ্টেন মাই ক্যাপ্টেন।'
১৮৬৫ সালে তিনি সরকারি চাকরি ছেড়ে একটি প্রাইভেট সংস্থায় সেক্রেটারি হিসেবে যোগ দেন।
১৮৭৩ সালে তাঁর বয়স যখন চুয়ান্ন সে সময় হঠাৎ করেই তিনি স্ট্রোক করলেন এবং বাতে পঙ্গু হওয়ার পর্যায়ে পৌঁছলেন এবং প্রায় শক্তিহীন হয়ে পড়লেন। এ সময়েই তাঁর মা মারা গেলেন, হুইটম্যান নিজেকে খুবই অসহায় ভাবতে লাগলেন এবং ওয়াশিংটন থেকে নিজের জন্মস্থানে ফিরে এলেন। শেষ পর্যন্ত নিউজার্সির ক্যামডেনে স্থায়ী হলেন। এ সময়েই তাঁর 'prayer of Colombus' লেখা হয়।
কোনো মহিলাকে হুইটম্যান বিয়ের প্রস্তাব পাঠিয়েছিলেন কি না এমন প্রমাণ মেলে না। তবে উইলিয়াম ব্রেকের জীবনী রচয়িতা আলেকজান্ডার জিলক্রিস্ট-এর সুন্দরী বিধবা হুইটম্যানকে প্রেমপত্র পাঠান, কিন্তু হুইটম্যান খুবই সম্মানের সাথে তাঁর পত্রের উত্তর প্রদান করেছিলেন।
হুইটম্যানের অন্যান্য সাহিত্যক্রমের মধ্যে 'ডেমোক্রেটিক ভিসতাসা, নভেম্বর বাউস' এ ব্যাকওয়ার্ড গ্ল্যানস', 'ওভার ট্রাভেল রোড' বিখ্যাত। 'সং অভ সাইলেন্স' তাঁর অন্যতম মহৎ কর্ম। ১৮৯২ সালের ২৬ মার্চ এই মহান কবি পরলোকগমন করেন।
সাহিত্য কর্ম :
কাব্যগ্রন্থ:
১৮৫৫ - 'লীভস অব গ্রাস' প্রকাশিত।
১৮৬৫ - 'প্যাসেজ টু ইন্ডিয়া' প্রকাশিত ।
১৮৭১ – 'আফটার অল নট টু ক্রিয়েট ওনলি' প্রকাশিত |
১৮৭২ - 'এজ এ' সং বার্ড অন পিনিয়নস ফ্রী' প্রকাশিত।
১৮৭৬ - 'টু রিভুলেটস' প্রকাশিত ।
১৮৮৮ - ‘নভেম্বর বাউজ'।
১৮৯১ - ‘গুড বাই, মাই ফ্যান্সী'।
প্রবন্ধ :
১৮৭১ - 'ডেমোক্রেটিক ভিসটাস' প্রকাশিত।
১৮৭৫ 'মেমোরেন্ডা ডিউরিং দা ওয়ার' প্রকাশিত।
১৮৮২ - 'কমপ্লিট প্রোজ ওয়ার্কস' প্রকাশিত।
১৯০৪ - এন আমেরিকান প্রাইমার' প্রকাশিত।
উপন্যাস:
১৮৪২- ফ্রাঙ্কলিন ইভাগ' প্রকাশিত।
ছোট গল্প :
১৯২৭- 'দি হার্ড ব্রীড অ্যান্ড আদার স্টোরিজ' প্রকাশিত।
O Captain My Captain
গুরুত্বপূর্ণ শব্দার্থ:
trip: n যাত্রা।
rack: n ধ্বংস।
sought: adj প্রার্থীত।
exulting: adj আনন্দময়।
keel: n জাহাজের নীচের অংশ।
Avessel: n পোত
bleeding: adj রক্তাক্ত।
flung: adj উড্ডীন ।
bugle: n বাদ্য যন্ত্র
trills: v ধ্বনি তোলা ।
boquest: n ফুলের তোড়া।
ribbon: n ফিতা।
wreath: n মানা
shore: n সৈকত।
swaying : adj আন্দোলিত।
beneath : pr. নীচে 1
pulse on: নাড়ি।
mournful: adj শোকাহত ।
সরল অনুবাদ:
হে নেতা ! নেতা আমার! শেষ হলো সে কঠিন অভিযান,
সব বাধা পেরিয়ে তরী, স্বপ্নে দিল প্রাণ,
তীর বেশি দূরে নয়, ধ্বনি তোলে জয়, জনতার বিজয় রব ওইতো শোনা যায়,
শক্ত হাতে হাল ধরো, পালের দিকে লক্ষ করো দুঃসাহসী সে তরি যেন পৌঁছে নির্দ্বিধায়
হা হৃদয়! হৃদয়! হৃদয়
আমার! দেহ থেকে অঝর ধারে রক্ত ঝরে,
পাটাতানের কাঠের পরে নেতা আমার আছেন পড়ে,
শীতল হয়ে মরে ।
হে নেতা! নেতা আমার! জেগে উঠে দেখ, বাজছে বিজয় বীন;
জেগে দেখো-তোমার তরে উড়ছে কেতন- বিজয় বাদ্য বাজছে বিরামহীন,
তোমার তরে ফুলের তোড়া, বিজয় মালায় জনতা অপেক্ষমাণ
তোমার তরে জনতা উচ্ছ্বসিত প্রাণ:
নেতা আমার পিতা আমার!
মাথার নীচে ওই হাত!
যেন স্বপ্ন দেখছে কত,
মৃত্যু তোমার, আনল জাতির আঁধার রাত
নেতা আমার, নিরুত্তর নিথর চিরতরে
পিতা আমার, নিস্পন্দ, ছোঁয়া পেয়েও আমার করে
তরি যদিবা তীরে, নিরাপদে নোঙর করে, যাত্রা শেষ জয়ে, ভয়াল যাত্রা শেষে
বিজয় নিয়ে তরি ঘরে ফেরে;
জয় ধ্বনি করো সবে, বিজয় ধ্বনি দিয়ে
আমি একা হাঁটব সেথা বিষাদ ভরা পায়,
হাঁটব সেথা, যেখা নেতা আমার শুয়ে
শীতল দেহে ঘুমিয়ে আছেন চিরনিদ্রায়।
কবিতার সারমর্ম:
আমেরিকার ত্রাতা, দাসপ্রথার বিলোপ কর্তা, গণতন্ত্রের সংজ্ঞা দাতা- আব্রাহাম লিঙ্কন আততায়ীর হাতে নিহত হলে, কবি হুইটম্যান শোক বিহ্বল হয়ে, লিঙ্কন স্মরণে কবিতাটি রচনা করেন। আমেরিকার ইতিহাসে আব্রাহাম লিঙ্কনের যে বিশাল ভূমিকা, কবি তাকে সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করেন। আবেগাপ্লুত হয়ে তাকে শুধু নেতা নয়, পিতা সম্বোধন করেন। কঠিন সংগ্রাম শেষে বিজয় ছিনিয়ে আনবার পর নেতার মহাপ্রয়ান কবিকে গভীরভাবে নাড়া দেয়। কবিতাটির ছত্রে ছত্রে সে গভীর দুঃখেরই প্রকাশ।
When Lilacs last at My Dooryard Bloomed
গুরুত্বপূর্ণ শব্দার্থ:
Lilacs: n টগর পরিবারের ফুল।
trinity: n একের মধ্যে তিন।
perennial: adj অনন্তকালীন ।
murk: n অন্ধকার ।
harsh: adj রুক্ষ।
surrounding: adj চারপাশ ।
palings: n বেড়া।
delicate: adj কোমল ।
spring: n কচি ডাল ।
swamp: n জলাভূমি ।
secluded: adj নির্জন।
recess: n বিরাম।
hermit: n পাখিবিশেষ।
shy: adj লাজুক।
hidden: adj লুকানো
warble: n পাখির গান ।
Mavoiding: adj এড়িয়ে যাওয়া যায় এমন।
violets: n বেগুনি রং।
debris: n আবর্জনার স্তূপ।
shroud: v আচ্ছাদিত করা।
orchards: n ফলের বাগান।
corpse: n শবদেহ।
pomp: n আড়ম্বর।
inlooped: adj আংটায় লাগানো।
draped: adj সজ্জিত।
flambeaus: n উজ্জ্বল আলোক সারি।
dirges: শোক গীতি ।
shuddering: adj কম্পিত।
chant: v গাওয়া, শোর করা।
sacred: adj পবিত্র।
boquet: n ফুলের তোড়া।
copious: adj প্রচুর।
transparent: adj স্বচ্ছ।
droop: v অবনত হওয়া।
solemn: adj গম্ভীর।
rim: n বৃত্তাকার।
breeze: n মৃদু বাতাস ।
concluded: v সমাপ্ত করা।
bashful: adj লাজুক।
tender: adj নরম।
lustrous: adj উজ্জ্বল।
detain: v বন্দি করা ।
prairies: n তৃণভূমি।
gray: adj ধূসর।
lucid: adj প্রাঞ্জল।
gorgeous: adj আড়ম্বরপূর্ণ।
indolent: adj অলস।
prolific: adj ফলোৎপাদী।
dapple: v রঙিন করা।
dwelling: adj আবাস।
dense: adj ঘন, গাঢ় ।
spires: n ঘোরানো সিঁড়ি ।
chant: v গাওয়া।
reedy: adj নলখাগড়ায় ভরা
uttermost: adj সর্বোচ্চ।
wondrous: adj বিস্ময়কর।
odorn: সুঘ্রাণ।
Minutia: n সংক্ষিপ্ত বিবরণী।
pent: v শোক করা।
trail: n লম্বা সারি।
dimness: n অস্ফুট আলো।
cedar: n পাইন জাতীয় গাছ ।
undulate: v ঢেউ খেলানো ।
serenely: adv মনোরমভাবে।
serenades: n লঘু সঙ্গীত ।
adornments: n সজ্জা।
feasting: n ভোজন ।
panoraman: বিচিত্র
shred: n টুকরো, খণ্ড
splinter: n অংশ, খণ্ড।
debris: n বর্জ্য স্তূপ।
musing:
comrade: n সাথি, সহযোদ্ধা বন্ধু ।
tallying: in আলো ছড়ানো ।
communing: v একাত্ম করা
retrievement: ধ্বংসাবশেষ।
সরল অনুবাদ:
১
শেষ যখন টগর ফুটেছিল দ্বারে
প্রভাত-তারা পশ্চিমাকাশে ডুবেছিল শেষ রাতে,
বিলাপ করেছি, করব বিলাপ আসন্ন সব বসন্ত প্রাতে।
প্রতি বসন্তে ত্রি-দল টগর, ফুটবে তুমি জানি
চিরদিনই ফুটবে টগর ডুববে প্রভাত তারা
সে ভাবনা জুড়ে থাকবে আমার চিন্তা সারা।
২
পশ্চিমাকাশের অপসৃত উজ্জ্বল তারা!
ওগো রাত্রির ছায়া-চঞ্চলা ক্রন্দসী রাত!
মহা আলোকময় অপসৃত ভারা, ওগো তমসা লুকাও তুমি সব তারা!
ওগো নির্মম হাত, কোরো না আমায় শক্তিহীন-দুর্বল অসহায়!
রুক্ষ মেঘে ঢেকেছে এ হৃদয়।
৩
দরজার পাশে, পুরোনো খামারমুখী সাদা বেড়ায় ঘেরা বাগে
উঁচু দাঁড়িয়ে হৃদাকারের গাঢ় সবুজ পাতায় শোভন টগর বন
কোমল কুঁড়ি মেলছে মুখ, স্নিগ্ধ সুরভীতে
সব পাতা বিস্ময় জাগা-সেই টগর ঝোপে
কোমল রংয়ে ফুটছে সবে, গাঢ় সবুজ পাতা হৃদাকারে
তারই একটা মাথা সমেত ভেঙে নিলাম।
8
কাদা জলে, একাকী মনে গাইছে এক পাখি বিরামে,
লাজুক পাখি লুকিয়ে একা গাইছে
নির্জনে
সব যন্ত্রণা ফেলে পিছে
উদাস মনে গাইছে
রক্তস্নানের গান
জীবন শেষের গান (বুঝি বন্ধু, তোমার ব্যথা)
গান যদি না থাকত তোমার গলে, যেতে না তুমি চলে ।
৫
আজ বসন্ত দিনে পেরিয়ে সব প্রান্তর, নগরী
অলিগলি, বন বনানী পেরিয়ে অবশেষে নাম না জানা বেগুনি ফুল
ফুটেছে যেথা সারি সারি
ঘাসের মাঝে, পথের ধারে শোভা শুধু তারি,
বাদামি মাঠের পরে পাকা ফসলের ফুরাল বুঝি দিন
আপেল বনটি পেরিয়ে পরে
যেথা শবটি ঘুমাকে শেষে
দিবস রাত্রি চলছে সে কফিন।
৬
কফিনটি চলছে রাত দিন সব পথই দিয়ে
কালো মেঘে ঢাকল ভুবন
সাড়ম্বরে পতাকা-ঢাকা, সব শহর কালো পতাকায় ম্লান
সব এলাকার নারীরা কালো কাপড় পরে
শব-মিছিল এঁকেবেঁকে দুলে, দীর্ঘ পথ পাড়ি দেয়
দাঁড়িয়েছে সার ধরে
শব-মিছিল এঁকেবেঁকে দুলে,দীর্ঘ পথ পাড়ি দেয়
আলোক মালার রাতে।
অগণিত প্রদীপ হাতে, অগনন জনতা
নগ্ন সবার মাথা
প্রতীক্ষা করে কফিনটি দেখার মুখগুলো সব
গাম্ভীর্য মাখা
সমাধি গীত রাত ভরে হাজার কণ্ঠ জুড়ে
গম্ভীর সে গীত রব সব এলাকা
হাজার কন্ঠ সে গান গেয়ে যায় শোকার্ত স্বরে চারধারে
মাঝখানের সেই কফিন,
নিভু আলোর গির্জাগুলোয় করুন সুরে বাজে
এরই মাঝে চলছে তোমার মরণ-রথ
গির্জাগুলোয় বেজেই চলে বিষাদ রব
ওই তো ধীরে আসছে কাছে কফিনটি
আমি তাতে গেলাম রেখে টগর মালাটি।
৭
(অন্য কারো তরে নয়, শুধু তোমার তরে
ফোটা ফুল সব ডাল সমেত দেব কফিন ভরে
গাইব ভোরের মতো স্নিগ্ধ সে গান
মৃত্যু মহান
কফিনটি ফুলে ফুলে ঢাকা ।
মৃত্যু, তোমায় ঢেকে দেব গোলাপ ফুলে ফুলে
সদ্য ফোটা পদ্ম আর টগর দলে
অনেক অনেক ফুল এনেছি বাগান থেকে
দু'হাত ভরা ফুলে আমি কফিন দেব ঢেকে,
ঢেকে দেব কফিন আর মৃত্যুকে।)
৮
ওগো পশ্চিম তারা, স্বর্গব্যাপী গতি তোমার
মাস ভরে দেখিনি তোমায়, বুঝেছি মৰ্ম তোমার ইশারার
নীরবে হেঁটেছি যখন আঁধার-স্বচ্ছ রাতে,
ভেবেছি মনে মনে যেন তুমি চাও আমায় বুঝতে
রাতের পর রাতে
আকাশ থেকে হারিয়ে যেন বুঝেছ আমার ব্যথা
(অন্য তারারা দেখেছে আমায় একা)
ওদের সাথে হেঁটেছি নিঝুম নীরব রাতে (জানি না)
কী যে আমায় রেখেছে নিদ্রাহীন)
রাত্রি শেষে পশ্চিমাকাশে
বুঝেছি তোমার দুঃখ কথা
শীতল হাওয়ার প্রাতে
স্বচ্ছ আঁধার রাতে,
যেখান থেকে হারিয়ে গেলে তুমি
রাতের অন্ধকারে
তোমার মতোই বিদীর্ণ মনে ঘুরেছি আমি, বৃত্ত হারালে তুমি যে রাতে
কক্ষ হারা বৃত্তহারা তুমি হারিয়ে গেলে
৯
জলাভূমে গেয়ে যাও তুমি
ও গায়ক পাখি কোমল করুণ সুরে, শুনি তোমার গান, তোমার কলরব,
শুনে তোমার গান, যেন বুঝে উঠি তোমায়
ক্ষণতরে থেমেছিলাম উজ্জ্বল তারায় ভেবে
বিদায়ী বন্ধু তারাটি আমার প্রতি পলে ভাবায় আমায়।
১০
কী করে গাই ব্যথার গান প্রিয় বন্ধুর তরে?
কী করেই বা প্রবোধ মানাব সন্তপ্ত মনে যে মহান মানুষ
হারাল চিরতরে?
কী ফুল দিয়েই বা সাজানো তার কবরে?
সাগর বাতাস বয় পুবে পশ্চিমে
পুবের পশ্চিমের সাগর বাতাস
তৃণভূমে বয়ে যায়
বুঝেছে তারা আমার বেদনায়
অজস্র ফুল ছড়িয়ে দেব তোমার কবর গায়।
১১
দেয়ালেই বা ঝুলার এখন আর কী?)
দেয়ালে ঝুলার কার ছবিটি?
সমাধিই বা তার সাজাব কী দিে
বসন্তের, খামারের বা
অস্তরাগের ধূসর মিহি
ধোঁয়া দিয়ে
সোনালি রোদের বন্যায় ভাসিয়ে দিয়ে,
জ্বলজ্বলে তারার আলোয় রাঙিয়ে,
নরম সবুজ ঘাসে
নাকি ফলবর্তী বৃক্ষ পাতে।
ওই যে দূরে রূপালি নদী ঝলকে, ঢেউ তার বুকে।
এখানে ওখানে জেগে থাকে
তীরে তার পাহাড়, নীরব
ঘুমায় আকাশে হেলান দিয়ে
শহরে সব জীবনের কলরব
অনেক ব্যস্ততা নিয়ে
কলকারখানার শ্রমিকরা কর্মদিন শেষে
ঘরে ফিরে ক্লান্ত মলিন বেশে।
১২
এ দেশটাই দেহ মন জুড়ে।
ম্যানহাটন আমার, প্রাসাদে, চকমকে স্রোতে
দোলায়মান পোতে
বিস্তীর্ণ বিচিত্র দেশ উত্তরে দক্ষিণে
ওহাইও সৈকত থেকে মিসৌরী তীরে
বিশাল প্রান্তর ঢাকা ঘাসে ফসলে।
সূর্য ছড়ায় কিরণ শিগ্ধ কখন, কখনো রুদ্র ভীষণ ।
রঙিন প্রভাত আসে বয়ে সমীরণ
স্নিগ্ধ কিরণে ভরায় ভুবন
দিগন্ত প্লাবি আলোয় ভরে দুপুর
রাতের তারারে ডেকে বাজে সাঁঝের নূপুর
সাদরে ঢেকে দেয় শহর প্রান্তর সুদূর।
১৩
গেয়ে যাও, আপন মনে হে ধূসর পাখি
জলাভূমে, বিরামে ঝোপে মুখ রাখি,
আঁধার পেরিয়ে পাইন বন ছাড়িয়ে।
বন্ধু আমার গেয়ে যাও তোমার গান
দুঃখ কাতর মানব মনে বাজে সে সুর সমান
কোমল করুণ স্বরে!
ব্যথা হত, বেদনার্ত হৃদয়ে আমার-হে বিস্ময়-গায়ক
তুমিই সঙ্গী আমার আর তারার আসর (সহসাই মিলাবে)
কিছুটাই ধরে রাখে মোহিনী টগর।
১৪
দিন ভর চোখ ভরে দেখেছি দূরে
দিনান্ত দেখেছি বসন্তের, ফসল ভরা মাঠের
ব্যস্ত হাত দেখেছি কিষাণের,
ভাবনাহীন রূপ দেখেছি আমার দেশের
(এত প্রলয় ঝড়ের পর) দেশ আমার স্বর্গ-সুন্দর
বিকেলের স্বর্গ খিলান দ্রুত মিলায়
জীবনের অনন্ত ধারা বয়ে চলে যায়
পোতাশ্রয় ছেড়ে পোতেরা ভাসে জলস্রোতে
পাল তোলে যাত্রাতে,
চক্রাকারে গ্রীষ্ম আসে ফসল ভরা ঘ্রাণে, ফসলের মাঠে
ব্যস্ত কিষাণ খুশি ভরা প্রাণে,
সব গৃহেই জীবন চলে আগের মতো দিন
সব কিছু চলছে ঠিক, কোনো বদলহীন,
পথে পথে চলে সচল জীবনের কলবর, হঠাৎ আবার
ব্যথা ভারে থেমে যায় সব
জীবনের সাথে জীবন মিলাই, দুঃখ ভারই
বেশি বই,
কালো মেঘই ছায় আমায়
মরণেরে নতুন করে চিনি আবার
মরণই চিন্তা ছায়।
মরণ চিন্তা হাঁটে আমার একপাশে
আমায় নিয়ে মরণ চিন্তা হাঁটে অন্যপাশে
মাঝে আমি চলি সে ভাবনার সাথি হয়ে
নীরব রাতে লুকাতে চেয়েছি কতবার
জলের প্রান্তে সৈকত ধরে, জলাভূমির আধার ভরে চেয়েছি লুকাতে বারবার
সিডার আর পাইন বনের ভুতুড়ে আঁধার জুড়ে।
আসত ভেসে গায়ক পাখির গান সে আঁধার ফুঁড়ে,
বাদামি ধূসর পাখি হতো আমার সাথি
মরণ সুরের পাইত সে গান মরণ আবহে
আপন মনে, একা বিরামে,
পাইন সিডারের সুবাসী বন হতে
সে সুরই আসত ভেসে আঁধার ভরা পথে।
সে সুর রাখত জুড়ে গোটা আঁধার বন
বন্ধু আমার স্মৃতি ভরে রাখত আমার মন,
আমার সারা মনে থাকত ভরে সে পাখির গানে
এসো মৃত্যু কোমল পদ ভাৱে
বিশ্বের সকল ধারে সকল কিনারে
দিবসে রাতে সবারে নাও তোমার হাতে,
আগে কিবা পরে সবারে নাও তোমার করে।
বিশ্ব ভুবন গায় তোমার গান,
জীবন জানতে, বুঝতে তাকে সব জানের রহস্য মৃত্যু
স্বাগত তোমায় মৃত্যু!
তোমার শীতল আলিঙ্গন।
গতি তার অতি সন্তর্পণ,
পূর্ণস্বরে উচ্চ রবেন কেউ কি তোমায় ডাকেনি?
তাহলে, আমিই উচ্চ রবে তোমায় মহান করে দিই।
ডেকে তোমায় বলি, আসবে যদি, এসো নিঃসঙ্কোচে।
ত্রাতা, মুক্তি দাতা এসো
এসে যখন, করবে তোমার কার্য সম্পাদন, গাইব
আমি তোমার জয়গান,
তোমার ভুবনে হারিয়ে শেষে
অনন্তে যাৰ মিশে।
আমার আমি ছাড়িয়ে হবো তোমার হারা
নেচে হেসে আপ্যায়ন করে তোমায়, কাটাব বেলা সারা
নিসর্গে দৃশ্য দেখব দিগন্ত বিস্তারি
অন্তর দিয়ে দেখব দিবসের আলো আর রাত্রির আঁধার কালো।
নীরব তারাদের দেখব রাতে,
সৈকতে শুনব ঢেউয়ের অনুচ্চ রব
চেনা আমার ওসব,
আত্মাকে সঁপব তোমার কাছে হে রহস্যময়
দেহটাও দেব তোমায় পরম কৃতজ্ঞতায়
তোমার তরে ছড়াব এক গান,
বৃক্ষ চূড়ে, সাগর, মাঠ বন বনানী তৃণভূমি জুড়ে,
ঘনবসতির শহরগুলোয় জাহাজভরা বন্দরগুলোয়
সে গান আমি ভাসিয়ে দেব তোমার বিজয় মেলায়।
১৫
হৃদয় মাঝে নিয়ত বাজে,
সে ধূসর পাখির গান,
নীরব রাতে সরব করে যোগায় তাতে প্রাণ ।
গুঞ্জন তোলে পাইন সিডার বলেন,
সতেজ করে জলাভূমি সোঁদা মাটির ঘ্রাণে,
আমার নেতার স্মৃতি জাগায় আমার প্রাণে।
নিষ্পলক চোখে যে সব স্মৃতি করি রোমন্থন
সে' সব ভাসে চোখের পরে রঙিন স্বপ্নের মতন।
স্বপ্নে দেখেছি অনেক যুদ্ধ-পতাকা,
ধূম্র-ভেদী অস্ত্র ধ্বনি সব একা একা,
দেখেছি তোমার নিথর দেহ অনেক রক্তে ঢাকা,
ধ্বংসাবশেষ পড়ে থাকতে দেখেছি অবশেষে, (সব নীরবে)
যুদ্ধাহত পড়ে আছে অনেকে।
অনেক দেখেছি মৃত সৈনিকের দেহ ইতস্তত, অনেক,
যুবকের সাদা কঙ্কাল পড়ে থাকতে দেখেছি অনেক,
কঙ্কাল আর নিহত সৈনিকের সার,
তেমন ছিল না তারা, যেমন তাদের ভাবা হয়
আত্ম ত্যাগে নির্ভয় তারা, এখন নীরবে ঘুমায়
জীবিত তাদের স্বজনেরা, মায়েরা কষ্ট পায়,
স্ত্রীরা, সন্তানেরা, সহযোদ্ধারা মনোবেদনায়,
বেঁচে রইল যারা তারাই ব্যথা পায়।
১৬
সব স্বপ্ন পেরিয়ে, পেরিয়ে সব রাত
হারিয়ে নেতার দীপ্ত দৃঢ় হাত
হারিয়ে সে পাখির বেদনা ভরা গান
শুনছি বিজয় বাণী, মৃত্যু-বিজয়ী ধ্বনি, বদলে যাওয়ার গান,
নিচুলয়ে হোক না বিলাপ, সে সুর ওঠে, পড়ে রাত্রি ভর
মিলায় আবার ভাসে সে সুর তবুও
জাগায় জীবনের কলঙ্কর,
মর্ত্যভেদী, ছড়ায় স্বৰ্গ ধামে,
সে গভীর সুর শুনেছিলাম, বিরামে,
যেতে যেতে টগরগুচ্ছ হৃদাকার পাতার
রেখে যাই দোর গোড়ায়, প্রতীক্ষা বসন্ত আসার
নেতা আমার, তোমার তরে থামিয়ে আমার গান,
পশ্চিমাকাশে তাকিয়ে, তোমার সাথে বাঁধি আমার প্রাণ,
নেতা আমার, দীপ্তি তোমার হবে না কভু ম্লান
রাত্রি শেষেও কীর্তি তোমার হবে না অবসান ।
ধূসর পাখিটি চিরদিন গাইবে তোমার জয়,
সে গান সুর ভুলবে সবার বুকে থাকবে যারা বিশ্বময়
চিরদিনই তারারা জ্বলবে ব্যথার আলোয় আলোয়
সে পাখিটির গান শুনবে অনাগত সব জন,
স্মৃতি তোমার রাখবে মনে ভালোবাসার ধনজ্ঞানে
আমার বন্ধুগণ
মধুরতম স্মৃতি, শ্রেষ্ঠতম দেশবাসী
রাখবে মনে, তোমায় ভালোবাসি
ফুল, পাখি, তারা সবে আমার মতো করে
রাখবে তোমার স্মৃতি ধরে বন প্রান্তরে।
কবিতার সারমর্ম:
প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিঙ্কনের অপ্রার্থীত অকাল প্রয়াণে রচিত শোক গাঁথায় কৰি হুইটম্যান নিজ শোক বিহ্বলতা ছড়িয়ে দিয়েছেন; প্রকৃতিতে, তারায়, ফুলে, পাখির গানে আর বন প্রান্তরে। জীবনের চলমানতাকে তিনি অস্বীকার করেননি। দেশব্যাপী, জনগণের প্রিয় নেতা, আধুনিক আমেরিকার নির্মাতা, দাস প্রথা বিলোপের প্রতিষ্ঠাতা আব্রাহাম লিঙ্কনের মরদেহ বাহিত হবার সময়ও কবি জীবন ও মৃত্যুর শোভাযাত্রা দেখেছেন একই সাথে। মৃত্যু জীবনের গতিকে থমকে দিলেও থামিয়ে দেয় না সেকথা মেনে নিয়েছেন কবি সর্বান্তকরণে। তাঁর ব্যক্তিগত দুঃখ বোধ সুগভীর হলেও কবি বাস্তবকে অস্বীকার করেননি। বারবারই বলেছেন জীবনের শত ব্যস্ততা, শত কোলাহলের মাঝেও সচেতন আমেরিকাবাসী কোনোদিনই তাদের নেতাকে ভুলে যাবে না। শ্রদ্ধায়, ভালোবাসায় তাদের মুক্তির দূত আব্রাহাম লিঙ্কনকে আমেরিকাবাসী চিরকাল মনে রাখবে করিব মতো করে, কবি সে আশা পোষণ করেন দৃঢ় মনে।