কিভাবে আল্লাহর কাছে চাইবেন? দোওয়া আয়াত ও বিশেষ সময় - How to ask Allah or God? Dua verses and special times
তিনি (আল্লাহ) তো ফিরিয়ে দেবেন না, (দু'আ এবং দু‘আর আয়াত ও বিশেষ সময়)।
দোওয়া হলো সকল ইবাদতের মূল।
এমন কিছু সময় আছে যখন দু'আ কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। রামাদান এর মধ্যে সবচেয়ে উত্তম সময়। দোওয়া সম্পর্কে মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনুল কারীমে বলেন, “আর (হে মুহাম্মাদ সাঃ), আমার বান্দারা যখন তোমাকে আমার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করে, (তখন বলে দিন) নিশ্চয় আমি (আমার জ্ঞানের মাধ্যমে) রয়েছি সন্নিকটে। আমি দু’আকারীর দু'আর জবাব দিই যখন তারা (কাউকে আমার সাথে শরিক না করে) আমার কাছে দু'আ করে।” (সূরাহ বাকারা: আয়াত ১৮৬)
“এবং তারা তোমাকে জিজ্ঞাসা করে' আর 'এবং যখন তারা তোমাকে জিজ্ঞাসা করে’ কথাটা কুরআনে ১৪ বার আছে। ইয়াস' আলুনাকা আছে ১৩ বার এবং ওয়া ইয়া ইয়াস’আলুনাকা আছে ১ বার। প্রতিবার যখন আল্লাহ বলেন ‘এবং তারা তোমাকে জিজ্ঞাসা করে', তারপরই লক্ষ্য করবেন 'কুল' (তাদের বলে দাও) কথাটা আছে। ব্যতিক্রম কেবল এই আয়াতে, এখানে দু’আর কথা বলা হয়েছে।
সব জায়গায় কুল আছে, খালি দু’আর জায়গাটা ছাড়া। “যদি তারা আপনাকে জিজ্ঞাসা করে” তারপর কোনো কুল (বলে দাও) নেই। এর মাধ্যমে আপনার কাছে বিশুদ্ধ তাওহীদের একটি বার্তা দেওয়া হচ্ছে, সেটি হলো আল্লাহর সাথে আপনার সরাসরি সম্পর্ক। আপনার এবং আল্লাহর মাঝে না আছে কোনো বার্তাবাহক, না কোনো ওলী, এমনকি নবী (স:)-ও নন। দু'আ সরাসরি আপনার ও আল্লাহর মাঝে। এটিই পূর্ণাঙ্গ এবং বিশুদ্ধ তাওহীদ।
দোওয়ার বিশেষ সময়
সকল সময়ে সকল পরিস্থিতিতে দু'আর জবাব দেওয়া হয়। আল্লাহ সকল সময়ে (দিন, রাত, সন্ধ্যা) ও সকল অবস্থায় (দাঁড়ানো, বসা, শোয়া), ওযু সহকারে কিংবা ওষু ছাড়া বান্দার দু'আর জবাব দেন। কিন্তু এমন কিছু সময় ও পরিস্থিতি আছে, যখন দু'আ কবুলের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
দু'আ কবুলের সেই ক্ষণগুলো আমাদের জেনে নেওয়া উচিত, যাতে দু’আর এই মাসে আমাদের দু'আগুলো যথাযথভাবে আল্লাহ্র কাছে পৌঁছায়। শুধু এ মাসেই নয়, বছরের যেকোনো সময়, যেকোনো দিনে আমরা যেন আল্লাহর দরবারে দু'আ পৌঁছানোর ব্যাপারে গাফিলতি না করি।
কোন সময় দোওয়া করলে কবুল হয় বা দু'আ কবুলের বিশেষ সময়গুলো হলো:-
- আরাফাহর দিন
- রামাদান মাস
- রাতের শেষ তৃতীয়াংশ
- বৃষ্টির সময়
- ইকামাতের পর
- আযান ও ইকামাতের মধ্যবর্তী সময় এবং
- সাওম পালনকারীর দু'আ।
রাতের শেষ তৃতীয়াংশে আল্লাহ দুনিয়ার নিকটবর্তী আসমানে নেমে এসে বলতে থাকেন—কেউ কি আছে যার কিছু প্রয়োজন? কেউ কি আছে—যে ক্ষমা পেতে চায়? এই সময় ও পরিস্থিতিগুলো যত একসাথে করতে পারা যায়, দু'আ কবুলের সম্ভাবনা তত বেড়ে যায় ইনশাআল্লাহ। উদাহরণস্বরূপ, রামাদান মাসে, লাইলাতুল কদরে রাতের শেষ তৃতীয়াংশে সেজদারত অবস্থায় করা দু'আ। কত চমৎকার এক সুযোগ! বিশেষ সময় আর বিশেষ পরিস্থিতি। এমন দু'আ কি বৃথা যেতে পারে?
ধূলিমলিন উপহার রামাদান
দোওয়ার আনুষ্ঠানিকতা
আপনি যেকোনো সময় যেকোনো অবস্থায় দু'আ করতে পারেন। কিন্তু মাঝেমাঝে আনুষ্ঠানিকতাগুলোও পালন করুন। যেমন- মাঝেমাঝে ওযু করে দু'আর পরিকল্পনা করুন। ব্যাপারটাকে আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করা হিসেবে চিন্তা করুন।
ওযু করে দুই রাকাত সালাত পড়ে কিবলামুখী হয়ে হাত তুলে দু'আ করুন। সহিহ মুসলিমের এক বর্ণনায় আছে রাসূল (সা:) একবার হাত এত উঁচু করেছিলেন যে, তাঁর বগলের শুভ্রতা দৃশ্যমান হয়ে গিয়েছিল। কখনো তিনি বুক পর্যন্ত হাত উঁচু করেছেন, কখনো আঙুল তুলে দু'আ করেছেন। আর হ্যাঁ, আঙুল তুলে দু'আ করায় কোনো সমস্যা নেই।
কেউ যখন দু'আ করার জন্য হাত তোলে, তখন চিরঞ্জীব ও সম্মানিত মহান আল্লাহ তাকে খালি হাতে ফিরিয়ে দিতে লজ্জাবোধ করেন। তিনি কখনোই আপনাকে শুন্য হাতে ফিরিয়ে দেবেন না। আবু দারদা (রা:) বলতেন, “তোমার হাতগুলো শিকলবন্দী হয়ে যাওয়ার আগেই সেগুলো আল্লাহর কাছে উঁচু করো।”
অতি উচ্চ ও অতি নিম্ন স্বরে দোওয়া না করা
বুখারি ও মুসলিমে এসেছে একবার সাহাবিরা যখন জোরে শব্দ করে দু'আ করলেন, নবীজি (সা:) বললেন “তোমরা তো কোনো বধির বা অনুপস্থিত কাউকে ডাকছ না।” একইভাবে কুরআনে আছে “সালাতে তোমার কণ্ঠস্বর অতি উচ্চ বা অতি নিচু কোরো না, বরং মধ্যবর্তী পন্থা অনুসরণ করো।” (সূরাহ বনী ইসরাইল: আয়াত ১১০) “বিনয় ও গোপনীয়তা সহকারে তোমাদের রবকে ডাকো।” (সূরাহ আল-আরাফ: আয়াত ৫৫)
এই আয়াতগুলোতে বলা হচ্ছে বেশি জোরে বা বেশি আস্তে না বলে মধ্যমপন্থা অবলম্বন করতে। এটি দু'আর আদবসমূহের একটি। যাকারিয়া ()-এর কণ্ঠস্বর মধ্যম পর্যায়ে রাখার কারণে আল্লাহ তাঁর প্রশংসা করেছেন। “যখন সে তার রব্বকে ডাকলো নিভৃতে।” (সূরাহ মারইয়াম: আয়াত ৩)
ছন্দে ছন্দে দোওয়া না করা:
দু’আকে একেবারে কবিতার মতো করে ফেলা উচিত নয়। স্বাভাবিকভাবে এমনটা হয়ে গেলে সমস্যা নেই, কিন্তু ইচ্ছা করে এমনটা করা যাবে না। বাংলা বা ইংরেজিতে এরকম ছন্দ মেলানোর ব্যাপারটা না থাকলেও, আরবিতে এরকম দেখা যায়।
আরবিতে একে বলে সাজা, যখন ছন্দ মিলিয়ে দু'আ করার বাড়াবাড়ি রকম চেষ্টা করা হয়। আল্লাহ বলেন, “তোমার রব্বকে বিনয় সহকারে নিভৃতে ডাকো। তিনি সীমালঙ্ঘনকারীদের পছন্দ করেন না।” (সূরাহ আল-আরাফ: আয়াত ৫৫)
দোওয়ার ক্ষেত্রে দৃঢ়চেতা হওয়া:
আল্লাহ আপনার দু'আ কবুল করবেন—এ কথা জেনে দৃঢ় সংকল্প সহকারে দু'আ করুন। সুনান আত-তিরমিযিতে আছে, “আল্লাহ তোমার দু'আর জবাব দেবেন, এ ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে আল্লাহকে ডাকো। তবে সে সাথে এটাও জেনে রাখো যে, গাফেল অন্তরের দু'আর জবাব দেওয়া হয় না।” যখন দু'আ করবেন, দৃঢ় থাকবেন এবং মন দিয়ে দু'আ করবেন।
নিশ্চিত থাকবেন এই ভেবে যে আল্লাহ আপনার দু'আ কবুল করবেন। এমনভাবে দু'আ করবেন না যে, “হে আল্লাহ আপনি চাইলে আমাকে ক্ষমা করুন। 'বরং বলবেন, 'হে আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করুন।'
দৃঢ় বিশ্বাস রাখুন যে আল্লাহ আপনাকে মাফ করবেন। দু'আ কবুলের ব্যাপারে মনে দ্বিধা রাখবেন না। আল্লাহ শয়তানের দু'আ কবুল করেছেন, আর তিনি আপনার দু'আ কবুল করবেন না? শয়তান দু'আ করেছিল তাকে যেন পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত অবকাশ দেওয়া হয়। “(ইবলীস) বলল, “আমাকে পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত অবকাশ দিন। (আল্লাহ) বললেন, “তুই অবকাশপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত।” (সূরাহ আরাফ: আয়াত ১৪-১৫)
আপনি তো শয়তানের চেয়ে নিকৃষ্ট নন। আমরা যা-ই করি না কেন, শয়তানের চেয়ে আমরা বেশি খারাপ নই যদিও আমাদের পাহাড়সম পাপ থাকে। যে আল্লাহ শয়তানের দু'আ ফিরিয়ে দেননি, তিনি কি আমাদের দু'আ ফিরিয়ে দেবেন? এমনকি অবিশ্বাসীরাও (মুশরিক) একটা সময় সৎভাবে আল্লাহকে ডাকে, যাতে তিনি সাড়া দেন।
“আর যখন তারা কোনো জলযানে আরোহণ করে, তারা আল্লাহকে একনিষ্ঠভাবে ডাকে। অতঃপর তিনি যখন নিরাপদে তাদের স্থলে পৌঁছে দেন, তারা তাঁর সাথে অন্যদের শরিক করতে থাকে।” (সূরাহ আনকাবুত আয়াত ৬৫)
মহাসাগরের স্রোত ও বাতাস যখন তাদের ডুবিয়ে দিতে উদ্যত হয়, তারা এক আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন করে। শির্ক পরিত্যাগ করে কিছু সময়ের জন্য এক আল্লাহর দিকে ফিরে আসে। তারা আগেও আল্লাহর সাথে শির্ক করেছে, আর আল্লাহ জানেন যে তাদেরকে নিরাপদে তীরে পৌঁছে দেওয়ার পর আবার তারা এ কাজ করবে।
তারপরও যখন তারা ইখলাসের সহিত আল্লাহকে কিছু সময়ের জন্য ডেকেছে আল্লাহ তাদের দু'আ কবুল করেছেন। তিনি যদি অল্প সময়ের জন্য খালেসভাবে দু'আ করা মুশরিকদের দু'আ কবুল করে থাকেন, তাহলে কি তাওহীদের অনুসারীদের দু'আ তিনি ফিরিয়ে দেবেন?
দোওয়াতে লেগে থাকুন:
ক্রমাগত দু'আ করতে থাকুন। যখন দু'আ করবেন, বারবার বারবার করবেন, আল্লাহর কাছে কাকুতি-মিনতি ও ভিক্ষা করবেন। সহিহ মুসলিমে আছে, নবীজি (সা:) কোনো দু'আ তিনবার করে করতেন। ইবনু মাসউদ (রা:) বলেন যে, “তিনি তিনবার করে আল্লাহর কাছে দু'আ করতেন।”
দু'আ এভাবেই করা উচিত এবং নিয়মিত করা উচিত। রাতারাতি দু'আ কবুল না হয়ে গেলেও হাল ছেড়ে দেবেন না। বরং দু'আর পরিমাণ আরও বাড়িয়ে দিন। কখনো এমনটা বলবেন না যে—আমি এত দু'আ করলাম অথচ আল্লাহ কবুল করলেন না। এভাবে করলে আপনি নিজেই নিজের দু'আকে ধ্বংস করে ফেলবেন।
বুখারি ও মুসলিমে আছে, “তোমাদের কেউ দু'আ করলে তার জবাব ততক্ষণ পর্যন্ত দেওয়া হতে থাকে যতক্ষণ না সে অধৈর্য হয়ে বলে, 'আমি দু'আ করেছি কিন্তু তা কবুল হলো না।” সালাফদের মাঝে দেখা যায়, কেউ ২০ বছর ধরে একটা জিনিস চেয়ে তা পাননি, তারপরও তাঁরা আশা ছাড়েননি, এরপরও তাঁরা দু'আ করে গেছেন এই আশায় যে একদিন আল্লাহ তাঁদের দু'আ কবুল করবেন।
দোওয়ার শুরু, মধ্যভাগ ও শেষে নবীজি (সা:)- এর প্রতি দরূদ পড়ুন:
দু’আর শুরু ও শেষে নবী (সঃ)-এর প্রতি দরূদ পাঠ করুন এবং দু’আর মাঝেও কোনো দরূদ পাঠ করুন। আবু সুলায়মান আদ-দারানি একটি সুন্দর কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, নবী (সঃ)-এর উপর দরূদ পড়ে দু'আ শুরু করুন এবং দরূদ পড়ে দু'আ শেষ করুন। কেন? নবীর প্রতি দরূদ পড়লে তা এমনিই কবুল হয়। আর আল্লাহ কোনো দু’আর শুরু ও শেষের অংশ কবুল করে মাঝের অংশ প্রত্যাখ্যান করবেন এমনটি হতে পারে না।
সবসময় দু’আর শুরু, মধ্যভাগ ও শেষে নবীজি (সা:)-এর প্রতি দরূদ পাঠ করুন। সহিহ তিরমিযি ও তাফসীর ইবনু কাসিরে সহিহ সনদে বর্ণিত আছে যে, উমার (রাঃ) বলেন, আসমান ও জমিনের মাঝে দু'আ আটকে থাকে, নবী (সা:)-এর উপর দরূদ না পড়া পর্যন্ত সেই দু'আ আসমানে পৌঁছে না। এটি অবশ্য উমার (রা:)-এর ব্যক্তিগত অভিমত হতে পারে। কারণ তিনি বলেননি যে, রাসূল (সা:) এটি বলেছেন।
তবে এ ধরনের কথা রাসূলুল্লাহ (সা:)-এর ওপরে আরোপযোগ্য, কারণ এগুলো দ্বীন সংশ্লিষ্ট বিষয়। এটা হতে পারে না যে, দ্বীনের ব্যাপারে উমার (রা:) একটা কথা বানিয়ে নিয়ে আসবেন। এই ধরনের কথা বা হাদিসের বিষয়ে এটাই বিধান।
শুআবুল ঈমানে ইমাম বায়হাকি একই রকম একটি উক্তি বর্ণনা করেছেন আলী (রাঃ) এর বরাতে। তিনি বলেছেন, আলী (রা:) বলেন, রাসূলুল্লাহ ()-এর প্রতি দরূদ পাঠ না করলে সকল দু'আ কবুল হয় না। এই একই হাদিস আলী (রা:)-এর বরাতে বর্ণনা করেছেন বাক্কী ইবনু মাখলাদ এবং সেটাকে মারফু হিসেবে গণ্য করেছেন।
অর্থাৎ, বাক্কী ইবনু মাখলাদের মতে এই উক্তিটি রাসূলুল্লাহ (সা:)-এর। বাক্কী ইবনু মাখলাদ হলেন সেই ব্যক্তি যিনি এক কয়েদির জন্য দু'আ করেছিলেন এবং সেই দু'আ কবুল হয়েছিল। তাঁর দু'আয় সেই কয়েদির শিকলগুলো একটির পর একটি ভেঙে যেতে থাকে এবং শেষ পর্যন্ত সে মুক্ত হয়ে যায়। তখন তাকে বলা হয়—নিশ্চয়ই তোমার মুক্তির জন্য কেউ একজন দু'আ করছিল।
অন্তরের আমল
সর্বশেষ বিষয় হলো অন্তরের আমল। যেমন- দু'আর আগে আল্লাহর কাছে তাওবাহ করুন। অন্যের হক আদায় করুন, পূর্ণ মনোযোগ সহকারে আল্লাহর প্রতি মনোযোগী হোন, সাদাকা করুন আর আশ্বস্ত থাকুন যে– আল্লাহ আপনাকে হতাশ করবেন না। তিনি বলেছেন চাও তাহলে আমি দেব। তার মানে তিনি দেবেনই।
ইবনু মুবারক () বলেন, “আমি একবার মদীনায় গেলাম। তখন সেখানে খরা চলছিল। লোকেরা বাইরে এসে লম্বা সময়ের জন্য ইস্তিসকা (বৃষ্টির জন্য দু'আ) করল। একদিন আমি মসজিদে গিয়ে এক কালো লোকের পাশে বসলাম, তার পরনে ছিল খাশ কাপড় (উট বা বকরির পশম থেকে তৈরি এক ধরনের খসখসে কাপড়)। লোকেরা অনেক আগেই চলে গেছে, তাদের দু'আ কবুল হয়নি।
আমি মসজিদে এই কালো লোকটির পাশে বসা। তার কাপড় তার কোমর ও কাঁধে জড়ানো ছিল। তাকে বলতে শুনলাম, হে আল্লাহ! আপনি পাপীদেরকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য লোকেদের উপর বৃষ্টি বন্ধ রেখেছেন। ইয়া হালীম ইয়া আল্লাহ, ইয়া হালীম ইয়া আল্লাহ, ইয়া হালীম ইয়া আল্লাহ, যার বান্দারা তাঁর কাছ থেকে কল্যাণ ছাড়া আর কিছুই আশা করে না, তাদেরকে বৃষ্টি দিন।
তাদেরকে এখন বৃষ্টি দিন, তাদেরকে এখন বৃষ্টি দিন, এখন, এখন! তিনি বলছিলেন, আস-সা'আহ আস-সা’আহ! সে এভাবে দু'আ করতেই থাকল—যতক্ষণ না চারদিক থেকে মেঘ এসে গর্জন সহকারে বৃষ্টি হতে শুরু করল। বড় বড় আলিমরা কিছু সময়ের ইস্তিসকা করলেন। ধনী-গরীব, নেতা- সাধারণ লোকজন সবাই দু'আ করেছিল। কিন্তু একজন অবহেলিত লোক, যার পরনে ছিল সবচেয়ে নিম্ন মানের পোশাক, সে যখন দু'আর জন্য হাত তুলল, আল্লাহ তা কবুল করে নিলেন।
মুসলিম উম্মাহর অংশ হিসেবে মাজলুম মুসলিমদের প্রতি দায়িত্বে অবহেলার জন্য আপনিও দায়ী। নিজের জন্য, পরিবারের জন্য, প্রিয় মানুষদের জন্য দু'আ তো করবেনই—সাথে নির্যাতিত অবহেলিত মুসলিমদেরও প্রতিদিন আপনার দু'আতে অন্তর্ভুক্ত করবেন, যাতে আল্লাহর সামনে দাঁড়ালে আপনি অন্তত বলতে পারেন যে, হে আল্লাহ! আমি তাদের জন্য দু'আ করেছিলাম।
এই ঘটনার পর ইবনু মুবারক দেখা করতে যান ফুদাইল ইবনু ইয়াদের সাথে। তাঁরা উভয়ই ছিলেন বড় ইমাম। ফুদাইল ইবনু ইয়াদ ইবনু মুবারককে দেখে জিজ্ঞেস করলেন, “তোমার কী হয়েছে, ইবনু মুবারক?” ইবনু মুবারক জবাব দিলেন, “এমন অনেক বিষয় আছে যেগুলোতে লোকেরা আমাদের হারিয়ে দিচ্ছে।” এরপর তিনি তাঁর কাছে সেই কালো লোকটির পুরো ঘটনাটা বর্ণনা করলেন।
তাঁরা উভয়ই দুঃখ ভারাক্রান্ত হয়ে পড়লেন এই ভেবে যে কীভাবে মানুষ গোপনে ইবাদাত করে তাঁদেরকে হারিয়ে দিচ্ছে (নিজেদের দু'আ কবুল করিয়ে নেয়ার মাধ্যমে)। এ ঘটনা শুনে ফুদাইল ইবনু ইয়াদ চিৎকার দিয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়েন। এক ভাই কিছুদিন আগে আমাকে একটি ভিডিও দেখিয়েছিল। সেখানে একদল মুসলিম একটি সেলে বন্দী, আর অহংকারে বুক ফোলানো এক বিচারক রায় দিল যে তাদের ফাঁসি দেওয়া হবে। তাঁরাও হেঁটে বের হলেন, সেও হেঁটে বের হল।
তাঁরা কারাগারে ঢুকলেন আর সে চলে গেল। দিন যেতে থাকল। ভিডিওটাতে মূলত বন্দীদের একজন কথা বলছিল। তিনি বললেন, “আমরা খুব মন থেকে আল্লাহর কাছে দু'আ করতে থাকলাম যেন তিনি আমাদের মর্যাদার সাথে কারাগার থেকে মুক্তি দেন। আর আমরা লাগাতার দু'আ করে গেলাম।” আপনি যদি একাকী কারাপ্রকোষ্ঠে নির্যাতনের মধ্য দিয়ে যান, তাহলে দেখবেন অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে দু'আ আসছে।
তিনি বললেন, “আমরা ভাবলাম কেউ একজন এসে হয়তো একদিন আমাদের কারাগার খুঁড়ে বের করে নিয়ে যাবে, অথবা কারাগার বিস্ফারিত হয়ে খুলে যাবে, অথবা ভেঙে যাবে, কিংবা ভূমিকম্প হবে। আমরা জানতাম না এটা কীভাবে হবে, তবে আমরা জানতাম যে, একদিন না একদিন আল্লাহ আমাদের দু'আ কবুল করবেন। সেটাই হলো, হঠাৎ একদিন কেউ একজন চাবি নিয়ে এসে দরজা খুলে দিয়ে বলল, “তোমরা মুক্ত।
পৃথিবীটা বদলে গেছে, এক দশকের জন্য সেই দেশের নেতা চলে গেছে আর তোমরা মুক্ত।” রামাদানের এই মাসে আপনার দু'আর ইবাদাতটি চালু করুন। যদি দু'আ করেন, তাহলে অন্যান্য সব ফযিলত পাওয়ার পাশাপাশি কেবল দু'আ করার জন্যও সাওয়াব পাবেন।
কেবল কুরআন তিলাওয়াত ও যিকির-আযকার করার কারণে যেমন আপনি সাওয়াব পেয়ে থাকেন, তেমনি শুধু দু'আ করার ফলেও আপনি সাওয়াব পাবেন। হ্যাঁ, আল্লাহ আপনার দু'আ কবুল করবেন, সেই সাথে শুধু দু'আ করার কারণে সাওয়াবও পাবেন, কারণ সেটাও একটা ইবাদাত । তাই আল্লাহর কাছে চান, দু'আ করুন এবং তাঁর দিকে ফিরে যান। আল্লাহর দরজাগুলো কখনোই বন্ধ হয় না।
দোওয়ার গুরুত্বপূর্ণ আয়াত
পবিত্র কুরআনুল কারীমের দোওয়ার আয়াতগুলো হতে কিছু আয়াত নিচে দেওয়া হলো:-
দোওয়া বা প্রার্থনার আয়াত: ১
اهدِنَــــا الصِّرَاطَ المُستَقِيمَ. صِرَاطَ الَّذِينَ أَنعَمتَ عَلَيهِمْ غَيرِ المَغضُوبِ عَلَيهِمْ وَلاَ الضَّالِّينَ
অর্থ: 'আমাদেরকে সরল পথ দেখাও,সে সমস্ত লোকের পথ, যাদেরকে তুমি নিয়ামত দান করেছ। তাদের পথ নয়, যাদের প্রতি তোমার গজব নাযিল হয়েছে এবং যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে।' [কুরআন ১ : ৬-৭]
দোওয়া বা প্রার্থনার আয়াত: ২
رَبَّنَا تَقَبَّلْ مِنَّا إِنَّكَ أَنتَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ
অর্থ: 'হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের থেকে কবুল কর। নিশ্চয়ই তুমি শ্রবণকারী, সর্বজ্ঞ।' [কুরআন ২ : ১২৭]
দোওয়া বা প্রার্থনার আয়াত: ৩
رَبَّنَا وَاجْعَلْنَا مُسْلِمَيْنِ لَكَ وَمِن ذُرِّيَّتِنَا أُمَّةً مُّسْلِمَةً لَّكَ وَأَرِنَا مَنَاسِكَنَا وَتُبْ عَلَيْنَآ إِنَّكَ أَنتَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ
অর্থ: 'হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের উভয়কে তোমার অনুগত কর এবং আমাদের বংশধর থেকেও একটি অনুগত দল সৃষ্টি কর, আমাদের ইবাদাতের নিয়ম-কানুন বলে দাও এবং আমাদের ক্ষমা কর। নিশ্চয় তুমি অত্যন্ত ক্ষমাশীল, অতিশয় দয়ালু।' [কুরআন ২ : ১২৮]
দোওয়া বা প্রার্থনার আয়াত: ৪
رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ
অর্থ: 'হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদিগকে দুনয়াতেও কল্যাণ দান করো এবং আখেরাতেও কল্যাণ দান করো এবং আমাদিগকে জাহান্নামের আযাব থেকে রক্ষা করো।' [কুরআন ২ : ২০১]
দোওয়া বা প্রার্থনার আয়াত: ৫
رَبَّنَا أَفْرِغْ عَلَيْنَا صَبْرًا وَثَبِّتْ أَقْدَامَنَا وَانصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ
অর্থ: 'হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের মনে ধৈর্য্য সৃষ্টি করে দাও এবং আমাদেরকে দৃঢ়পদ রাখ, আর কাফির জাতির বিরুদ্ধে আমাদের সাহায্য কর।' [কুরআন ২ : ২৫০]
দোওয়া বা প্রার্থনার আয়াত: ৬
رَبَّنَا لاَ تُؤَاخِذْنَا إِن نَّسِينَا أَوْ أَخْطَأْنَا
অর্থ: 'হে আমাদের প্রতিপালক! যদি আমরা ভুলে যাই কিংবা ভুল করি, তবে আমাদেরকে অপরাধী করো না।' [কুরআন ২ : ২৮৬]
দোওয়া বা প্রার্থনার আয়াত: ৭
رَبَّنَا وَلاَ تَحْمِلْ عَلَيْنَا إِصْرًا كَمَا حَمَلْتَهُ عَلَى الَّذِينَ مِن قَبْلِنَا
অর্থ: 'হে আমাদের প্রতিপালক! এবং আমাদের উপর এমন দায়িত্ব অর্পণ করো না, যেমন আমাদের পূর্ববর্তীদের উপর অর্পণ করেছিলে।' [কুরআন ২ : ২৮৬]
দোওয়া বা প্রার্থনার আয়াত: ৮
رَبَّنَا وَلاَ تُحَمِّلْنَا مَا لاَ طَاقَةَ لَنَا بِهِ وَاعْفُ عَنَّا وَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَآ أَنتَ مَوْلاَنَا فَانصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ
অর্থ: 'হে আমাদের প্রতিপালক! এবং আমাদের দ্বারা ঐ বোঝা বহন করিও না, যা বহন করার শক্তি আমাদের নাই। আমাদের পাপ মোচন করো, আমাদেরকে ক্ষমা করো এবং আমাদের প্রতি দয়া করো। তুমিই আমাদের প্রতিপালক। সুতরাং কাফের সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদের কে সাহায্যে করো।'
[কুরআন ২ : ২৮৬]
দোওয়া বা প্রার্থনার আয়াত: ৯
رَبَّنَا لاَ تُزِغْ قُلُوبَنَا بَعْدَ إِذْ هَدَيْتَنَا وَهَبْ لَنَا مِن لَّدُنكَ رَحْمَةً إِنَّكَ أَنتَ الْوَهَّابُ
অর্থ: 'হে আমাদের প্রতিপালক! সরল পথ প্রদর্শনের পর তুমি আমাদের অন্তরকে সত্যলংঘনে প্রবৃত্ত করোনা এবং তোমার নিকট থেকে আমাদিগকে অনুগ্রহ দান কর। তুমিই সব কিছুর দাতা।' [কুরআন ৩ : ৮]
দোওয়া বা প্রার্থনার আয়াত: ১০
رَبَّنَا إِنَّكَ جَامِعُ النَّاسِ لِيَوْمٍ لاَّ رَيْبَ فِيهِ إِنَّ اللّهَ لاَ يُخْلِفُ الْمِيعَادَ
অর্থ: 'হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি মানুষকে একদিন অবশ্যই একত্রিত করবে, এতে কোনই সন্দেহ নেই। নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর ওয়াদার অন্যথা করেন না।' [কুরআন ৩ : ৯]
দোওয়া বা প্রার্থনার আয়াত: ১১
رَبَّنَا إِنَّنَا آمَنَّا فَاغْفِرْ لَنَا ذُنُوبَنَا وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ
অর্থ: 'হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা ঈমান এনেছি, কাজেই আমাদের গোনাহ ক্ষমা করে দাও আর আমাদেরকে জাহান্নামের আযাব থেকে রক্ষা কর।' [কুরআন ৩ : ১৬]
দোওয়া বা প্রার্থনার আয়াত: ১২
رَبَّنَا آمَنَّا بِمَا أَنزَلَتْ وَاتَّبَعْنَا الرَّسُولَ فَاكْتُبْنَا مَعَ الشَّاهِدِينَ
অর্থ: 'হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা সে বিষয়ের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছি যা তুমি নাযিল করেছ, আমরা রসূলের অনুগত হয়েছি। অতএব, আমাদিগকে মান্যকারীদের তালিকাভুক্ত করে নাও।' [কুরআন ৩ : ৫৩]
দোওয়া বা প্রার্থনার আয়াত: ১৩
ربَّنَا اغْفِرْ لَنَا ذُنُوبَنَا وَإِسْرَافَنَا فِي أَمْرِنَا وَثَبِّتْ أَقْدَامَنَا وانصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ
অর্থ: 'হে আমাদের প্রতিপালক! মোচন করে দাও আমাদের পাপ এবং যা কিছু বাড়াবাড়ি হয়ে গেছে আমাদের কাজে। আর আমাদিগকে দৃঢ় রাখ এবং কাফিরদের উপর আমাদিগকে সাহায্য কর। '[কুরআন ৩ : ১৪৭]
দোওয়া বা প্রার্থনার আয়াত: ১৪
رَبَّنَا مَا خَلَقْتَ هَذا بَاطِلاً سُبْحَانَكَ فَقِنَا عَذَابَ النَّارِ
অর্থ: 'হে আমাদের প্রতিপালক! এসব তুমি অনর্থক সৃষ্টি করনি। সকল পবিত্রতা তোমারই, আমাদিগকে তুমি জাহান্নামের শাস্তি থেকে বাঁচাও।' [কুরআন ৩ : ১৯১]
দোওয়া বা প্রার্থনার আয়াত: ১৫
رَبَّنَا إِنَّكَ مَن تُدْخِلِ النَّارَ فَقَدْ أَخْزَيْتَهُ وَمَا لِلظَّالِمِينَ مِنْ أَنصَارٍ
অর্থ: 'হে আমাদের প্রতিপালক! নিশ্চয় তুমি যাকে দোযখে নিক্ষেপ করবে, তাকে অবশ্যই তুমি অপমান করবে; আর জালিমদের জন্যে তো সাহায্যকারী নেই।' [কুরআন ৩ : ১৯২]
দোওয়া বা প্রার্থনার আয়াত: ১৬
رَّبَّنَا إِنَّنَا سَمِعْنَا مُنَادِيًا يُنَادِي لِلإِيمَانِ أَنْ آمِنُواْ بِرَبِّكُمْ فَآمَنَّا
অর্থ: 'হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা নিশ্চিতরূপে শুনেছি একজন আহবানকারীকে ঈমানের প্রতি আহবান করতে যে, তোমাদের পালনকর্তার প্রতি ঈমান আন; তাই আমরা ঈমান এনেছি।' [কুরআন ৩ : ১৯৩]
দোওয়া বা প্রার্থনার আয়াত: ১৭
رَبَّنَا فَاغْفِرْ لَنَا ذُنُوبَنَا وَكَفِّرْ عَنَّا سَيِّئَاتِنَا وَتَوَفَّنَا مَعَ الأبْرَارِ
অর্থ: 'হে আমাদের প্রতিপালক! অতঃপর আমাদের সকল গোনাহ মাফ কর এবং আমাদের সকল দোষত্রুটি দুর করে দাও, আর আমাদের মৃত্যু দাও নেক লোকদের সাথে।' [কুরআন ৩ : ১৯৩]
দোওয়া বা প্রার্থনার আয়াত: ১৮
رَبَّنَا وَآتِنَا مَا وَعَدتَّنَا عَلَى رُسُلِكَ وَلاَ تُخْزِنَا يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِنَّكَ لاَ تُخْلِفُ الْمِيعَادَ
অর্থ: 'হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে দাও, যা তুমি ওয়াদা করেছ তোমার রসূলগণের মাধ্যমে এবং কিয়ামতের দিন আমাদিগকে তুমি অপমানিত করো না। নিশ্চয় তুমি ওয়াদা ভঙ্গ করো না।' [কুরআন ৩ : ১৯৪]
দোওয়া বা প্রার্থনার আয়াত: ১৯
رَبَّنَا آمَنَّا فَاكْتُبْنَا مَعَ الشَّاهِدِينَ
অর্থ: 'হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা ঈমান আনলাম, অতএব, আমাদেরকেও মান্যকারীদের তালিকাভুক্ত করে নাও।' [কুরআন ৫ : ৮৩]
দোওয়া বা প্রার্থনার আয়াত: ২০
رَبَّنَا أَنزِلْ عَلَيْنَا مَآئِدَةً مِّنَ السَّمَاء تَكُونُ لَنَا عِيداً لِّأَوَّلِنَا وَآخِرِنَا وَآيَةً مِّنكَ وَارْزُقْنَا وَأَنتَ خَيْرُ الرَّازِقِينَ
অর্থ: 'হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের প্রতি আকাশ থেকে খাদ্যভর্তি খাঞ্চা অবতরণ করুন। তা আমাদের প্রথম ও পরবর্তী সবার জন্যে আনন্দোৎসব হবে এবং আপনার পক্ষ থেকে একটি নিদর্শন হবে। আপনি আমাদের রুযী দিন। আপনিই শ্রেষ্ট রুযীদাতা।' [কুরআন ৫ : ১১৪]
দোওয়া বা প্রার্থনার আয়াত: ২১
رَبَّنَا ظَلَمْنَا أَنفُسَنَا وَإِن لَّمْ تَغْفِرْ لَنَا وَتَرْحَمْنَا لَنَكُونَنَّ مِنَ الْخَاسِرِينَ
অর্থ: 'হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা নিজেদের প্রতি জুলম করেছি। যদি আপনি আমাদেরকে ক্ষমা না করেন এবং আমাদের প্রতি অনুগ্রহ না করেন, তবে আমরা অবশ্যই অবশ্যই ধ্বংস হয়ে যাব।' [কুরআন ৭ : ২৩]
দোওয়া বা প্রার্থনার আয়াত: ২২
رَبَّنَا لاَ تَجْعَلْنَا مَعَ الْقَوْمِ الظَّالِمِينَ
অর্থ: 'হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে এ জালিমদের সাথী করো না।' [কুরআন ৭ : ৪৭]
দোওয়া বা প্রার্থনার আয়াত: ২৩
رَبَّنَا افْتَحْ بَيْنَنَا وَبَيْنَ قَوْمِنَا بِالْحَقِّ وَأَنتَ خَيْرُ الْفَاتِحِينَ
অর্থ: 'হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের আর আমাদের সম্প্রদায়ের মধ্যে সঠিকভাবে ফয়সালা করে দাও। আপনিই শ্রেষ্টতম ফয়সালাকারী।' [কুরআন ৭ : ৮৯]
দোওয়া বা প্রার্থনার আয়াত: ২৪
رَبَّنَا أَفْرِغْ عَلَيْنَا صَبْرًا وَتَوَفَّنَا مُسْلِمِينَ
অর্থ: 'হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের জন্য ধৈর্য্যের দ্বার খুলে দাও এবং আমাদেরকে মুসলিম হিসেবে মৃত্যু দান কর।' [কুরআন ৭ : ১২৬]
দোওয়া বা প্রার্থনার আয়াত: ২৫
رَبَّنَا لاَ تَجْعَلْنَا فِتْنَةً لِّلْقَوْمِ الظَّالِمِينَ وَنَجِّنَا بِرَحْمَتِكَ مِنَ الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ
অর্থ: 'হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে জালিমদের নির্যাতনের পাত্র করোনা। আর তোমার অনুগ্রহে আমাদেরকে কাফির সম্প্রদায় থেকে রক্ষা করো।' [কুরআন ১০ : ৮৫-৮৬]
দোওয়া বা প্রার্থনার আয়াত: ২৬
رَبَّنَا إِنَّكَ تَعْلَمُ مَا نُخْفِي وَمَا نُعْلِنُ وَمَا يَخْفَى عَلَى اللّهِ مِن شَيْءٍ فَي الأَرْضِ وَلاَ فِي السَّمَاء
অর্থ:'হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি তো জানেন আমরা যা কিছু গোপন করি এবং যা কিছু প্রকাশ করি। আসমান ও জমীনের কোন কিছুই আল্লাহর নিকট গোপন নয়।' [কুরআন ১৪ : ৩৮]
দোওয়া বা প্রার্থনার আয়াত: ২৭
رَبِّ اجْعَلْنِي مُقِيمَ الصَّلاَةِ وَمِن ذُرِّيَّتِي
অর্থ: 'হে আমাদের প্রতিপালক! আমাকে নামায কায়েমকারী করুন এবং আমার সন্তানদের মধ্যে থেকেও।' [কুরআন ১৪ : ৪০]
দোওয়া বা প্রার্থনার আয়াত: ২৮
رَبَّنَا وَتَقَبَّلْ دُعَاء
অর্থ:'হে আমাদের প্রতিপালক! এবং কবুল করুন আমাদের দোয়া।' [কুরআন ১৪ : ৪০]
দোওয়া বা প্রার্থনার আয়াত: ২৯
رَبَّنَا اغْفِرْ لِي وَلِوَالِدَيَّ وَلِلْمُؤْمِنِينَ يَوْمَ يَقُومُ الْحِسَابُ
অর্থ: 'হে আমাদের প্রতিপালক! হিসাব গ্রহণের দিনে আমাকে, আমার পিতা-মাতাকে এবং সব মুমিনকে ক্ষমা করে দিও।' [কুরআন ১৪ : ৪১]
দোওয়া বা প্রার্থনার আয়াত: ৩০
رَبَّنَا آتِنَا مِن لَّدُنكَ رَحْمَةً وَهَيِّئْ لَنَا مِنْ أَمْرِنَا رَشَدًا
অর্থ: 'হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি আমাদেরকে নিজের কাছ থেকে রহমত দান করুন এবং আমাদের জন্যে আমাদের কাজ সঠিকভাবে পূর্ণ করুন।' [কুরআন ১৮: ১০]