সক্রিয় নাগরিক ক্লাব - ৬ষ্ঠ শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান ২য় অধ্যায়ের সমাধান | Class 6 History and Social Sciences Chapter 2 Answer (PDF)
৬ষ্ঠ শ্রেণি/Class 6 ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান ২য় অধ্যায় সমাধান New Curriculum Textbooks History and Social Sciences Book Chapter 2 Guide 2023 মাধ্যমিক/দাখিল স্তর উভয়ের জন্য।
দ্বিতীয় অধ্যায়: সক্রিয় নাগরিক ক্লাব
সক্রিয় নাগরিক ক্লাব
আজ ক্লাসে একটা আনন্দঘন পরিবেশ। সবাই বেশ ফুর্তিতে আছে। গতদিন খুশি আপা বলে দিয়েছিলেন আজ ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান ক্লাসের সময়ে বিদ্যালয়ের মাঠে বা যেখানে জায়গা পাওয়া যাবে সেখানে সবাই মিলে ফুটবল খেলা হবে। শ্রেণিকক্ষে সবাই অধীর আগ্রহে তাই খুশি আপার জন্য অপেক্ষা করছে।
কেউ কেউ ব্যাগে করে প্রিয় খেলোয়াড়ের ছবিও নিয়ে এসেছে। একটু পর পর বের করে সবাইকে দেখাচ্ছে। এসবের মধ্যেই হাতে আস্ত একটা ফুটবল নিয়ে আকর্ণ বিস্তৃত হাসি মুখে নিয়ে খুশি আপা ক্লাসে ঢুকে পড়লেন। সবার মাঝেই বিরাট এক উত্তেজনা।
হাতের ইশারায় সবাইকে থামিয়ে, খুশি আপা বললেন, কি সবাই প্রস্তুত? সবাই সমস্বরে বলে উঠলো, প্রস্তুত আপা।
তাহলে এসো আমরা দুইটা দল গঠন করে ফেলি। প্রথমে আমরা সবাই মিলে চলো দুইজন অধিনায়ক ঠিক করে নেই। তারপর আমাদের দুই অধিনায়ক তাদের দলের অন্য খেলোয়াড়দের বাছাই করে নেবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে যাতে দল গঠনের সময় ছেলে-মেয়ে, বিশেষ চাহিদা সম্পন্নসহ সব ধরণের সক্ষমতার শিক্ষার্থীই কোনো না কোনো ভাবে যার যার সক্ষমতা অনুসারে খেলায় বা খেলার কাজে অংশগ্রহণ করতে পারে।
তখন শামীমা প্রস্তাব করলো যে, নীলা আর গণেশ হতে পারে দুই জন অধিনায়ক। অন্য দিকে মোজাম্মেল প্রস্তাব করলো যে ফ্রান্সিস আর রুপা হতে পারে দুই জন অধিনায়ক। সবাই চিন্তিত হয়ে পড়লো তাহলে এই চারজনের মধ্য থেকে কোন দুই জন হতে পারে তাদের অধিনায়ক।
অনুসন্ধান বলে উঠলো, আমরা ভোটের মাধ্যমে যে কোন দুই জনকে বাছাই করে নিতে পারি। তখন সবাই মিলে ভোট দিলো এবং ভোটে নীলা আর গণেশ দুই অধিনায়ক হিসেবে নির্বাচি ত হলো। এরপর নীলা আর গণেশ অন্য খেলোয়াড়দের দলে যুক্ত করে তাদের দল গঠন সম্পন্ন করলো।
মাঠে গিয়ে খুশি আপা বললেন, আজ কিন্তু খেলা হবে অন্য রকমভাবে। আজ খেলায় কোন নিয়ম থাকবে না। খেলোয়াড়রা যে যেমন ইচ্ছা তেমন করেই খেলতে পারবে। শুনে দুই দলের খেলোয়াড়রাই মহা খুশি হয়ে উঠলো, এই ভেবে যে আজ আর গোলের হিসেব কেউ ঠিক করে রাখতে পারবে না। রেফারির দায়িত্ব পালন করছে তাদের ক্লাসেরই খাদিজা।
খাদিজা বাঁশি বাঁজাতেই খেলা শুরু হয়ে গেল। তারপর ১৫ মিনিট ধরে তারা মহা উৎসাহের সাথে নিয়ম ছাড়া ফুটবল খেলার চেষ্টা করলো। তারপর খুশি আপা নিয়ম ছাড়া খেলার পর্ব শেষ করলেন। এবার তিনি বললেন, এসো আমরা নিয়ম অনুযায়ী ফুটবল খেলি। তারপর তারা আবার নিয়ম- কানুন মেনে ফুটবল খেললো।
নীলা ও গণেশ এর দলের মতো চলো আমরাও ক্লাসের বন্ধুদের সাথে দুই দলে বিভক্ত হয়ে ফুটবল খেলি(নিজেরা দল ভাগ করে খেলা খেলতে পারো।)
নিয়ম ছাড়া কোনো কিছুই কাজ করে না!
পরদিন ক্লাসে সবাই উত্তেজিত হয়ে ফুটবল খেলা নিয়ে আলোচনা করছিল। খুশি আপা এসে বললেন, কাল যে আমরা ফুটবল খেললাম সেটা তোমাদের কেমন লেগেছে? সবাই সমস্বরে বলে উঠলো, খুবই ভালো!!
খুশি আপা তখন বললেন, গতকাল আমরা দুই ভাবে ফুটবল খেলেছি, তাতে খেলায় কি কোনো পার্থক্য তৈরি হয়েছে? চিংময় বললো, আমিতো ভেবেছিলাম নিয়ম ছাড়া ফুটবল খেলার সময় এত গোল হবে যে কোন হিসেব রাখা যাবে না। কারণ সবাই হাত দিয়েই গোল দেবে। খাদিজা বললো, অথচ কোন দলই একটাও গোল দিতে পারে নি।
কোন নিয়ম ছাড়াই খেলতে গিয়ে একজন যখন বল হাতে নিয়ে দৌড় দিয়েছে অন্যরা তার উপর ঝাপিয়ে পড়েছে। ফলে একজায়গায় জটলা পাকিয়ে কেউ কোনো দিকে যেতে পারে নি। বারবার এই একই পরিস্থিতি তৈরি হওয়াতে নির্ধারি ত সময়ে আর কেউ গোল করতে পারে নি। আসলে নিয়ম ছাড়া খেলাটাই শেষ পর্যন্ত আমরা খেলতে পারি নি। চলো এবার আমরা ৫/৬ জনের গ্রুপে বসে নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে বের করি।
মাধ্যমিক/দাখিল ৬ষ্ঠ শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বই এর ২য় অধ্যায়ের ছকসহ সমাধান - সক্রিয় নাগরিক ক্লাব
২৫ নং পৃষ্ঠার উত্তর:
নিয়ম কি শুধু খেলাতেই থাকে?
উত্তর: না, নিয়ম শুধু খেলাতেই থাকে না।
আর কোন কোন ক্ষেত্রে আমরা নিয়ম দেখতে পাই? চলো তার একটি তালিকা তৈরি করি।
উত্তর: আমরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিয়ম দেখতে পাই বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিয়মের তালিকা নিম্মরুপ
১। সামাজিক নিয়ম।
২। পারিবারিক নিয়ম।
৩। ধর্মীয় নিয়ম।
৪। কার্যক্ষেত্রে নিয়ম।
৫। বিদ্যালয়ের নিয়ম।
৬। আচার-আচরণের নিয়ম।
কোথায় কী ধরণের নিয়ম রয়েছে?
উত্তর: যে ধরণের নিয়ম রয়েছে তা হলো:-
১। সামাজিক নিয়ম: পরস্পর পরস্পরকে সাহায্য সহযোগিতা করা, প্রতিবেশিদের বিপদ-আপদে এগিয়ে আসা, বড়দের শ্রদ্ধা করা, ছোটদের স্নেহ করা, অন্যের ক্ষতি হয় এমন কাজ থেকে বিরত থাকা, সামাজিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করা ইত্যাদি
২। পারিবারিক নিয়ম: পরিবারের শৃঙ্খলা মেনে চলা, মা-বাবার কথা মেনে চলা, বড় ভাই-বোনকে শ্রদ্ধা করা, ছোট ভাই-বোন কে স্নেহ করা, পরিবারের সম্মান নষ্ট হয় এমন কাজ করা থেকে বিরত থাকা।
৩। বিদ্যালেয়র নিয়ম: শিক্ষককে সম্মান করা, বন্ধুদের সাথে সহযোগিতা পূর্ণ আচরণ করা, বিদ্যালয়ে প্রবেশ ও বাহিরে যাবার সময় ধৈর্যের সাথে লাইনে দাঁড়ানো, বিদ্যালয় কোনো ভাবেই অপরিচ্ছন্ন না করা, বিদ্যালয় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে নিয়মিত দায়িত্ব পালন করা ইত্যাদি।
৪। ধর্মীয় নিয়ম: ধর্মীয় নিয়ম-নীতি মেনে চলা, ধর্মীয় কাজ পালন করা, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা।
৫। রাস্তা দিয়ে যাওয়া-আসার নিয়ম: বিদ্যালয়ে যাওয়ার সময় রাস্তার বাম পাশ দিয়ে যাওয়া এবং
আসার সময় ডান পাশ দিয়ে আসা। রাস্তায় কিংবা যানবাহনে বিশৃঙ্খলা না করা।
নিয়ম না থাকলে ঐসব ক্ষেত্রে কী ধরণের সমস্যা হতে পারে?
উত্তর: প্রত্যেকটি জায়গায়, প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই কিছুনা কিছু নিয়ম আছে। নিয়ম ছাড়া কোনো কাজই সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন হয় না। কোনো কাজে সফল হওয়ার জন্য সুষ্ঠ নিয়ম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাছাড়া নিয়ম ছাড়া বিশৃঙ্খলাপূর্ণ পরিবেশের সৃষ্টি করে।
শ্রেণিকক্ষে অনুসরণের নিয়মের নমুনা:
১। পরিচিত কারও সাথে দেখা হলে হাসিমুখে কুশল বিনিময় করব
২। অন্যের মতামতের ব্যাপারে শ্রদ্ধা প্রদর্শন কর দর্শ বো
৩। কেউ যখন কথা বলবে অন্যরা ধৈর্য সহকা ধৈর্য রে শুনবো
৪। নিজের মতামত দেওয়ার আগে হাত তুলে অনুমতি নেবো
৫। কোন বিষয়ে বিরোধ হলে একসাথে বসে আলোচনা করে মীমাংসা করবো
বিদ্যালয়ে অনুসরণের জন্য নিয়মের নমুনা:
১। বিদ্যালয়ে প্রবেশ ও বাহিরে যাবার সময় ধৈর্যের সা ধৈর্যে থে লাইনে দাঁড়াবো।
২। বিদ্যালয় কোনো ভাবেই অপরিচ্ছন্ন করবো না
৩। বিদ্যালয় পরিস্কার রাখতে নিয়মিত দায়িত্ব পালন করবো
পরিবারে ও সমাজে অনুসরণের জন্য নিয়মের নমুনা:
১। নিজের কাজ নিজে করবো
২। অন্যের সমস্যা বা ক্ষতি হয় এমন কাজ করবো না
৩। নতুন মানুষের সাথে কথা বলার সময় আগে নিজের পরিচিয় দেব। এর পর অনুমতি নিয়ে বিনয়ের সাথে কথা বলব।
৪। ধর্ম, বর্ণ, নারী-পুরুষ, বর্ণ বিত্ত ও সামাজিক অবস্থান নির্বিশেষে সমাজের সকল মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন কর দর্শ ব এবং ছোটদের স্নেহ ও ভালোবাসা দেব।
৫। রাস্তায়, হাটে-বাজারে ও যেকোনো সমাবেশে এমনভাবে চলব যাতে অপরের চলাচলের কোনো সমস্যা না হয়। অপ্রয়োজনে কোথাও ভিড় বাড়াব না।
৩০ নং পৃষ্ঠার উত্তর:
চলো বন্ধুদের সাথে নিয়ে আমরাও একটি সক্রিয় নাগরিক ক্লাব গড়ে তুলি এবং আমাদের কার্যক্রম শুরু করি।
উত্তর: বন্ধুদের সাথে নিয়ে আমরাও একটি সক্রিয় নাগরিক ক্লাব গড়ে তোলার লক্ষ্যে এবং আমাদের কার্যক্রম সর্ম্পকে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:-
কমিটির পদসংখ্যা: ১০টি
১। সভাপতি
২। সহ-সভাপতি
৩। যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক
৪। তথ্য ও প্রচার সম্পাদক
৫। নিয়ম-শৃঙ্খলা বিষয়ক সম্পাদক
সদস্য:
- .....................................................
- .....................................................
- .....................................................
- .....................................................
- .....................................................
ক্লাবের নিয়ম-কানুন সমূহঃ
১। ক্লাবের সদস্য কেবল এই বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা হতে পারবে।
২। ক্লাবের মেয়াদ কাল থাকবে ১ বছর।
৩। ক্লাবের সকল সদস্যরা তাদের উপর থাকা অর্পিত দায়িত্বগুলো যথাযথ ভাবে পালন করতে হবে।
৪। আইন শৃঙ্খলা অমান্য করলে ক্লাব থেকে বের হয়ে যাবে।
৫। বিদ্যালয়ে জনকল্যাণমূলক কাজ করতে হবে।
কমিটি নির্বাচন:
ধাপ-১: ক্লাবের কমিটি নির্বাচনে কে কে কোন পদে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চাই তার একটি
তালিকা তৈরি করা।
ধাপ-২: তালিকা তৈরি করার পর তাদের জন্য প্রতীক বরাদ্ধ করা।
ধাপ-৩: নির্বাচনের আচরণ বিধি সবাইকে জানানো এবং কোন দিন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে সবাইকে জানানো।
ধাপ-৪: নির্বাচনের দিন প্রার্থীদের ভোট দেওয়া সম্পন্ন হলে ; ভোট গণনা করে ফলাফল প্রকাশ করা।
ধাপ-৫: নির্বাচিত প্রার্থীদের নিয়ে “সক্রিয় নাগরিক ক্লাব” গঠন করা।
চূড়ান্ত কমিটি:
কমিটির পদসংখ্যা: ১০টি
১। সভাপতি: তানজির মজুমদার আলিফ
২। সহ-সভাপতিঃ ইমতিয়াজ হোসেন রায়হান
৩। যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক: ফারহান কাদেরী
৪। তথ্য ও প্রচার সম্পাদক: মাহবুবুর রহমান
৫। নিয়ম-শৃঙ্খলা বিষয়ক সম্পাদক: কাজেম আলী
সদস্য:
১। করিম
২। তুহিন
৩। রহিম
৪। সায়েম
৫। রাফিয়া সুলতানা
কার্যক্রম:
নতুন কমিটি দ্রুত তাদের প্রথম মিটিংয়ের তারিখ নির্ধারণ করবে। এবং প্রথম সভাতেই তারা পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করে পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ শুরু করবে।
মূল্যায়ন:
এবার চলো আমরা নিচে যুক্ত আত্মমূল্যায়নের ছকের মাধ্যমে আমাদের সক্রিয় নাগরিক ক্লাবের সাথে আমাদের কার্যক্রমের মূল্যায়ন করি।
৩০ নং পৃষ্ঠার উত্তর:
আত্মমূল্যায়নের ছক (শিক্ষার্থী নিজে পূরণ করবে)
সম্পূর্ণ অধ্যায়ের উত্তর পিডিএফ প্রিভিউ থেকে দেখে নোট করে রাখেন।