Biography of Chandidas, the first poet of Vaishnava Padavali - বৈষ্ণব পদাবলির আদি কবি চণ্ডীদাস এর জীবনী
পূর্ব বাংলার বৈষ্ণব কবি চণ্ডীদাস ছিলেন জাতিতে ব্রাহ্মণ। তাঁর আরাধ্য দেবতার নাম বাশুলী বা বিশালাক্ষী। তিনি চৈতন্যপূর্ব যুগের কবি অর্থাৎ চৌদ্দ শতকের শেষার্ধ থেকে পনের শতকের প্রথমার্ধ সময়ের কবি ছিলেন। তিনি বড়ু চণ্ডীদাস থেকে পৃথক কবি ছিলেন এ কথা নিশ্চিত।
প্রশ্ন: বাংলা ভাষায় বৈষ্ণব পদাবলির আদি কবি কে?
উত্তর: বাংলা ভাষায় বৈষ্ণব পদাবলির আদি কবি চণ্ডীদাস।
বাংলা ভাষায় বৈষ্ণব পদাবলির আদি কবি চণ্ডীদাস এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:
√ চণ্ডীদাস সহজিয়াপন্থী কবি ছিলেন।
√ তিনি পূর্বরাগ পর্যায়ের পদ রচনায় পাণ্ডিত্য দেখিয়েছেন।
√ চৈতন্যদেব তাঁর পদাবলি শুনে বিমোহিত হয়েছিলেন।
প্রশ্ন: তিনি শ্রীকৃষ্ণকে কীরূপে তুলে ধরেছেন?
উত্তর: চণ্ডীদাস শ্রীকৃষ্ণকে সম্পূর্ণ পৌরাণিক ভূমিকায় স্থাপন করেছেন। তিনি রাধার চরিত্রে মিলনের আনন্দের চেয়ে বিচ্ছেদের বেদনাকে তীব্রতর করে রূপায়িত করেছেন।
প্র. চণ্ডীদাস সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ কী মন্তব্য করেছিলেন?
উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন, 'চণ্ডীদাস সহজ ভাষায় সহজ ভাবের কবি- এই গুণে তিনি বঙ্গীয় প্রাচীন কবিদের মধ্যে প্রধান কবি।' এছাড়াও তিনি চণ্ডীদাসকে "দুঃখবাদী কবি” বলেছেন।
প্র. চণ্ডীদাসকে প্রথম মানবতাবাদী কবি বলা হয় কেন?
উত্তর: তিনি 'শুনহ মানুষ ভাই / সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপর নাই।' বলে জাত-পাতযুক্ত সমাজে প্রথম মানবতার বাণী কাব্যে ধারণ করেছেন। তাছাড়া ব্যক্তিজীবনেও তিনি জাত-সংস্কারের ঊর্ধ্বে ছিলেন।
প্র. চণ্ডীদাস সম্পর্কে আলোচনা করুন।
উত্তর: চণ্ডীদাস ছিলেন বৈষ্ণব কবি, সহজিয়াপন্থী ও বাশুলি দেবীর ভক্ত। তিনি বাংলা ভাষায় বৈষ্ণব পদাবলির আদি কবি। শিক্ষিত বাঙালি বৈষ্ণব সাহিত্যের রস ও আনন্দের সংবাদ পেয়েছে চণ্ডীদাসের পদাবলি থেকে। চৈতন্যদেব তাঁর পদাবলি শুনে বিমোহিত হয়েছিলেন। তিনি পূর্বরাগ পর্যায়ের পদ রচনায় পাণ্ডিত্য দেখিয়েছেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর চণ্ডীদাসকে ‘দুঃখবাদী কবি' বলেছেন।
চণ্ডীদাসের রচনারীতির বৈশিষ্ট্য :
চণ্ডীদাস একান্ত সহজ সরল গ্রাম্য জনগণের প্রচলিত আটপৌরে ভাষায় তিনি পদাবলি রচনা করেছেন। সাধারণ বাঙালির দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত ভাষাতেই তার পদ রচনা । কিন্তু সেই সর্বজনপরিচিত লৌকিক ভাষা চণ্ডীদাসের সহজাত প্রতিভার স্পর্শে অলৌকিক ভাবব্যঞ্জনায় শিল্পমূল্য পেয়েছে। তাঁর ভাষা শব্দের বন্ধন ছাড়িয়ে ভাবের স্বাধীন লোকে ঊর্ধ্বগামী হয়েছে। ভাষার অলংকরণে সচেতনভাবে প্রয়াসী না হলেও কল্পনায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে আবেগে যা সৃষ্টি করেছেন তা গভীর ভাবব্যঞ্জনায় শ্রেষ্ঠ শিল্পরূপ লাভ করেছে।
চণ্ডীদাস এর বিখ্যাত উক্তি
- সই কেমনে ধরিব হিয়া / আমার বঁধূয়া আন বাড়ী যায় / আমার আঙিনা দিয়া।'
- 'সই কেবা শুনাইল শ্যাম নাম।'
- 'শুনহ মানুষ ভাই / সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপর নাই।'